SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

এসএসসি(ভোকেশনাল) - পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং-২ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

কোয়েলের জাত

পৃথিবীতে বর্তমানে ১৭ থেকে ১৮ জাতের কোয়েল আছে। অন্যান্য পোল্ট্রির মতো এর মাংস এবং ডিম উৎপাদনের জন্য পৃথক পৃথক জাত আছে। পৃথিবীতে কোয়েলের বিভিন্ন জাতের মধ্যে জাপানিজ কোয়েল অন্যতম। উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন জাতের কোয়েলের প্রকৃত উৎস জাপানিজ কোয়েল ৷

জাপানিজ কোয়েলটি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন: কমন কোয়েল, স্টাবল কোয়েল, ফারোয়া কোয়েল, ইষ্টার্ন কোয়েল, এশিয়াটিক কোয়েল, জাপানি কিং কোয়েল, লাল গলা বিশিষ্ট কোয়েল ইত্যাদি। উত্তর আমেরিকায় বব হোয়াইট কোয়েল এবং ক্যালিফোর্নিয়া কোয়েল নামের বিভিন্ন জাতের কোয়েল পাওয়া যায় ।

বিভিন্ন জাতের কোয়েলের বৈশিষ্ট্য :

কোয়েলের জাত/উপজাত 

বাণিজ্যিক জাপানি কোয়েলের অনেকগুলো জাত ও উপাজাত রয়েছে। জাত ও উপাজাতভেদে এদের গায়ের রঙ, ওজন, আকার, আকৃতি, ডিম পাড়ার হার ডিমের ওজন, বেঁচে থাকার হার ইত্যাদিতে বেশ পার্থক্য হয়ে থাকে। প্রতিটি জাত ও উপজাত থেকে উন্নত বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রজনন ঘটিয়ে বিভিন্ন স্ট্রেইন ও লাইন সৃষ্টি করা হয়েছে। স্ট্রেইনভেদে কোয়েলের ডিম পাড়া, ডিমের ওজন, মাংস উৎপাদন ক্ষমতা প্রভৃতিতে কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় ।

লেয়ার কোয়েল 

জাপানি কোয়েল ছোটখাট ও গাট্টাগোট্টা পাখি। এদের ঠোঁট, ঘাড় ও পা খাটো, লেজ ছোট। পালকের তুলনায় দেহ (মাংস, হাড় ও নাড়িভুঁড়ি) বেশি ভারি। ঠোঁটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত একেকটি কোয়েল গড়ে ১৭.৫ সে.মি. লম্বা হয়। তবে আমাদের দেশে আনা পুরষ ও স্ত্রী কোয়েলগুলোর ওজন যথাক্রমে ১২০-১৩০ গ্রাম ও ১৪০-১৫০ গ্রাম হয়ে থাকে। কোয়েলের ডিমগুলো অত্যন্ত সুন্দর। ডিমের খোসার রঙ গাঢ় হলদে থেকে হালকা বাদামি। খোসার এ রঙের উপর থাকে অসংখ্য ছোট বড় নীল, বেগুনি, খয়েরি বা চকোলেট রঙের কারুকাজ বা দাগ। একেক কোয়েলের ডিমের কারুকাজ বা কারুকাজের রঙ একেক রকম হয়। কোনো কোনো লাইনের কোয়েল বছরে ২৯০-৩০০ টি ডিম পাড়ে।

বর্তমানে পৃথিবীতে পাঁচটি উপজাতের লেয়ার কোয়েল বেশি জনপ্রিয়। যেমন- 

১. ফারাও 

২. ব্রিটিশ রেঞ্জ 

৩. ইংলিশ হোয়াইট 

৪. ম্যানচুরিয়ান গোল্ডেন ও 

৫. টুক্সেডো

পাঁচ উপজাতের কোয়েলের মধ্যে প্রজনন ঘটিয়ে নানা বর্ণের কোয়েল তৈরি করা যায়। এ উপজাতগুলোর মধ্যে ফারাও উৎকৃষ্টতম। তাই বিশ্বব্যাপী এর কদরই বেশি। ফারাও উপজাত থেকে ব্রাউন কোয়েল নামে একটি স্ট্রেইন তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশে ডিমের জন্য ফারাও এবং ব্রাউন দুই প্রকারের কোয়েলই পালন করা হয়।

 

ফারাও কোয়েলের বৈশিষ্ট্য :

  • ফারাও কোয়েলের পালকের রঙ হুবহু বুনো জাপানি কোয়েলের মতো। 
  • এদের পালকের রঙ বাদামি।
  • সারা গায়ে গাঢ় চকোলেট বা কালো রঙের ছোপ থাকে।
  • প্রাপ্তবয়ষ্ক পুরুষ কোয়েলগুলোর বুকের উপরের অংশ হলদে বাদামি এবং নিচের অংশ হালকা বাদামি, 
  • মুখমন্ডলের রঙটা খয়েরি । 
  • স্ত্রী কোয়েলগুলোর মুখমন্ডল, ঘাড় ও বুকের উপরের অংশ বাদামি ।
  • বুকের উপরের অংশের এ বাদামি রঙের উপর কালো বা খয়েরি গোলাকার ফোঁটা থাকে। 
  • এদের বুকের নিচের অংশটা তামাটে। 
  • সদ্যফোটা ৬-৭ গ্রাম ওজনের বাচ্চাগুলোর গায়ের কোমল পালকের রঙ হলদে। এর উপর খয়েরি বা কালো রঙের ছোপ থাকে ।
  • এরা ৬-৭ সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে। 
  • আট সপ্তাহে ডিম উৎপাদন ৫০% এ পৌঁছে। দশ সপ্তাহে তা বেড়ে গিয়ে ৮০% হয় এবং ১৫ সপ্তাহের মধ্যে ডিম উৎপাদন সর্বোচ্চ পর্যায়ে (৯০%) পৌঁছায়। এরা ৭৫% ডিম বিকেল ৩-৬ টার মধ্যে এবং বাকি ডিম এ সময়ের পরে পেড়ে থাকে ।

ব্রাউন কোয়েলের বৈশিষ্ট্য 

ব্রাউন কোয়েলের পালকের রঙের ধরন ফারাও কোয়েলের মতোই কিছু ফারাও উপজাতের থেকেও তুলনামূলকভাবে বেশি খয়েরি হয়। বাচ্চাগুলোর কোমল পালকের রঙ হলদে। তবে এ ফলদের উপরের ছোপগুলো তুলনামূলকভাবে হালকা। এরা অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির, ফারাও কোয়েলের মতো মারামারি বা ঠোকরাকরি করে না। এছাড়া বাকি সব বৈশিষ্ট্য প্রায় ফারাও কোয়েলের মতোই।

ব্রয়লার কোয়েলের বৈশিষ্ট্য 

বৰ হোয়াইট :

  • এই জাতের কোয়েলের উৎপত্তিস্থল আমেরিকায় । 
  • এই জাতীয় কোয়েলকে মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়।
  • ৬-১৬ সপ্তাহ বয়সে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা যায়।

কুটর্নিক্স কুটর্নিক্স জাপনিকা

এই জাতের কোয়েলের উৎপত্তিস্থল জাপানে। এই জাত থেকে মাংস ও ডিম উৎপাদনের জন্য দুইটি লাইন তৈরি করা হয়েছে। মাংসের জন্য তৈরিকৃত লাইন ৬ সপ্তাহ বয়সে বয়ঃপ্রাপ্ত হয় ও বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা যায়। এই জাতীয় তিনটি কোয়েলের নাম হল-

ক) কারী উত্তম 

খ) কারী উচ্চাওয়াল 

গ) কারী সুউয়েটা

উপরোক্ত কোয়েলের উৎপাদন বৈশিষ্ট্যসমূহ-

  • এ জাতীয় কোয়েলের দেহের বৃদ্ধি দ্রুত হয়। 
  • তাদের খাদ্য রূপাক্ষরের দক্ষতা বেশি হয়।
  • এদের ৫-৬ সপ্তাহ বয়সে বাজারজাত করা যায়। 
  • ৬ সপ্তাহ বয়সে এই জাতীয় কোয়েলের দৈহিক ওজন ১৫৫ গ্রাম থেকে ১৯০ গ্রাম হয়ে থাকে।
  • দৈনিক খাবারের প্রয়োজন হয় ২৫-২৮ গ্রাম।

 

 

Content added || updated By

Promotion

Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.